কলকাতা ভ্রমণ-

কলকাতা নামটি শুনলেই মনে পড়ে অনেক স্মৃতিবিজরিত জিনিস। কোন এক সময় এই কলকাতাই ছিল আমাদের রাজধানী এবং ভারতবর্ষের রাজধানী আমাদের সবকিছু বাণিজ্য,শিক্ষা,রাজনী­তি কলকাতা কেন্দ্রীক ছিলো। ১৭৭২ সালে কলকাতাকে ভারতবর্ষের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেষ্টীং সকল গুরুত্বপূর্ণ অফিস মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তর করেন। তখন থেকেই সমগ্র ভারতবর্ষে কলকাতার গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। পরবর্তী প্রায় ১৩৯ বছর ভারতবর্ষের রাজধানী হিসেবে কলকাতা থেকে যায়। তবে আর ইতিহাস নয় এখন আপনাদেরকে কলকাতা ভ্রমণ বিষয়ক টিপস জানাবো।

দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে গেলে সবার আগে যে বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার সেটা হচ্ছে বৈধ পাসপোর্ট। ঝামেলা এড়াতে আগে থেকেই পাসপোর্ট করে রাখা ভাল। আপনার যদি পাসপোর্ট না করা থাকে তাহলে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দেশনা অনুসরণ করুনঃ  http://www.passport.gov.bd/। পাসপোর্টে কমপক্ষে ৩-৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে এবং ভিসার জন্য পাসপোর্টের কমপক্ষে দুই পেইজ খালি থাকতে হবে। অনলাইনে ই-টোকেনের আবেদন করতে হলে এই লিংক ভিজিট করুন। http://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/

কলকাতা ভ্রমণ টিপস

  • OYO কিংবা booking.com এ আগে থেকেই হোটেল বুক করে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • সামারে শর্টস পরার চেষ্টা করাই ভাল।
  • সাথে একটা ব্যাকপ্যাক রাখবেন সমসময় যেটাতে পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস রাখবেন।
  • ফোনে ইন্টারনেট রাখবেন কিংবা গুগল ম্যাপ থেকে সিটির ম্যাপ ডাউনলোড করে নিবেন।
  • ছাতা রাখবেন সাথে।
  • সোলো হলে আসার আগে চেষ্টা করবেন এই শহর বিষয়ক অনেক ব্লগ পড়ার গুগল করলেই পেয়ে যাবেন তখন মনে হবে এই শহর আপনি আগে থেকেই চিনেন।
  • খাবার হালাল হারামের তেমন কোন ঝামেলা নেই তাও নিজের মধ্যে সন্দেহ থাকলে অনেক মুসলিম হোটেল আছে নিউমার্কেট ও বড় বাজারের আশে পাশে বিফ লাভার হলে আপনার জন্য হ্যাভেন কলকাতা।
  • এখানে ঢাকার মত কোন রিক্সা নেই শুধু ট্যাক্সি অল্প দূরত্বে যেতে হলেও ট্যাক্সিই ভরসা তাই পর্যাপ্ত হাটার মানুষিকতা থাকতে হবে এবং খরচ বাচাতে হলে বাস ও মেট্রোরেল ব্যবহার করতে হবে।

ভিসার জন্যও প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রঃ

  • পাসপোর্ট এবং পাসপোর্টের ফটোকপি।
  • ই-টোকেন এবং ই-টোকেনের ফটোকপি।
  • অফিস প্যাডে কভার লেটার এবং ভিজিটিং কার্ড
  • সদ্য তোলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের এককপি ফটো।
  • ডলার এন্ড্রোসমেন্ট অথবা ব্যাংক স্টেটম্যান্ট ।
  • টেলিফোন বিল অথবা ইলেক্ট্রিক বিলের ফটোকপি।
  • ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • ব্যাংকের কোনো কার্ড থাকলে ফটোকপি দিতে পারেন (যদি থাকে)।
  • ভিসা ফি হিসেবে খরচ হবে মাত্র ৬০০/- টাকা।

যা করা যাবে না:
• কোনভাবেই ইন্ডিয়ান রুপি নিয়ে ইন্ডিয়ান বর্ডারে ঢুকা যাবে না।
• ডলার এন্ডোর্সমেন্ট করে যদি ভিসা নিয়ে থাকেন থাকলে তাহলে, ডলার ছাড়া ইন্ডিয়ান বর্ডার ঢোকা যাবে না, কারণ ডলার ফিজিক্যালি দেখবে।
• আপনি চাইলেও বাংলাদেশ অথবা ইন্ডিয়া যেকোনো বর্ডারে ইমিগ্রেশন ফরম ফিলাপ করতে পারবেন না যার জন্য দুইটি বর্ডার এ একশ একশ করে২০০ টাকা দিতে হবে।
• কাস্টমস চেকিং এর সময় সবকিছু বৈধ থাকলেও আপনি তাদের ভাষায় অবৈধ, দুই দিকেই একশ একশ করে অতিরিক্ত 200 টাকা দিতে হবে তাহলে আপনি হবেন বৈধ।
• চেষ্টা করবেন বাংলাদেশের যখন কোন সরকারি ছুটি থাকে বা কোন রকমের অকেশনালি ছুটি থাকে তাহলে ভ্রমণ না করার জন্য ভোগান্তি এবং কষ্টের পরিমাণটা অনেক বেশি থাকে।

মানি এক্সচেঞ্জ
সেখানে টাকাগুলো রুপি করে নিতে পারেন অসংখ্য মানি এক্সচেঞ্জ পাবেন সেখানে, আপনি আপনার পছন্দমত যেকোন মানি এক্সচেঞ্জার দিয়ে টাকা পরিবর্তন করে নিতে পারেন ইন্ডিয়ান রুপিতে, সেখানে রেট মোটামুটি ভালই দেয়।

সিম কার্ড
আপনি চাইলে ভারতীয় মোবাইল সিম পেট্রাপোলে কিনে নিতে পারবেন আড়াইশো থেকে 500 টাকার মধ্যেই আপনি সিম কার্ডটি পেয়ে যাবেন। আর হ্যাঁ গাড়ি ছাড়ার আগ পর্যন্ত পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশী মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় আপনি চাইলে আপনার স্বজনদের সাথে সেখান থেকেই কথা বলে নিতে পারেন বাংলাদেশি সিমে।

বেনাপোলপেট্রোপোল বন্দর
সকালে যখন ঘুম ভাংলো উঠে দেখি বেনাপোল পৌঁছে গেছি, বন্দরের কর্মতৎপরতা তখনও শুরু হয়নি। আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এর সামনে লোকজনের সমাগম হতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে, যারা ভারত ভ্রমণে ইচ্ছুক।

ট্রাভেল ট্যাক্স
ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়ার জন্য আপনি চাইলে নিজেও দিতে পারেন অথবা বাসের সুপারভাইজার কে ৫০০ টাকা অতিরিক্ত ৫০ অথবা ১০০ টাকা বকশিশ বাবদ দিয়ে ট্যাক্স দিতে পারবেন। তবে আমরা রিকমেন্ড করব আপনি যেহেতু ভ্রমণের যাত্রা  কনফার্ম করেছেন পার্শ্ববর্তী কোন সোনালী ব্যাংক থেকে নিজে গিয়ে ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিয়ে আসবেন এতে আপনার সময় এবং ভোগান্তি দুইটাই কম হবে।

আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি

বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি প্যাসেঞ্জার কে ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা করে দিতে হবে, তবে সেখানে আপনাকে ৫০ টাকা দিলে আর বাকি টাকা ফেরত দেয়া হয় না।

বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন
প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি পরিশোধের পরে আপনাকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেয়া হবে, তখন আপনাকে ট্রাভেল ট্যাক্স এর কপি গুলোতে সিল দেয়া হবে এবং তিনটির মধ্যে একটি রেখে নেয়া হবে, সেই সাথে ইমিগ্রেশন ফরম ফিলাপ করবেন, তারপর লাইন ধরে ইমিগ্রেশন পর্যন্ত যাবেন, ইমিগ্রেশন অফিসার আপনার একটি ছবি নিয়ে পাসপোর্টে সিল দিয়ে দিবে, তখন আপনি আবার প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এরিয়া থেকে বের হয়ে আপনার হাতে থাকা দুইটি ট্রাভেল ট্যাক্স এর একটি পুলিশ অফিসার কে ইন্ডিয়া বর্ডারের ঢুকার আগে দিতে হবে। তবে বলে রাখি বর্ডার থেকে বের হওয়ার সময় আপনাকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা গুনতে হবে যেটা কোন নিয়ম নীতির মধ্যে নাই কিন্তু দেয়াটা বাধ্যতামূলক।  

বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, এই দেশ আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার হ্যাপি_ট্রাভেলিং।।

ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ